বাঙাল যখন আসে মোর গৃহদ্বারে, নূতন লেখার দাবি লয়ে বারে বারে; আমি তাঁরে হেঁকে বলি সরোষ গলায়-- শেষ দাঁড়ি টানিয়াছি কাব্যের কলায়। মনে মনে হাসে, তবুও সে ফিরে ফিরে আসে। তারপর এ কী? সকালে উঠিয়া দেখি নির্লজ্জ লাইনগুলো যত বাহির হইয়া আসে গুহা হতে নির্ঝরের মতো। পশ্চিমবঙ্গের কবি দেখিলাম মোর বাঙালের মতো নাই জেদের অপ্রতিহত জোর।
অজস্র দিনের আলো, জানি, একদিন দু চক্ষুরে দিয়েছিলে ঋণ। ফিরায়ে নেবার দাবি জানায়েছ আজ তুমি, মহারাজ। শোধ করে দিতে হবে জানি, তবু কেন সন্ধ্যাদীপে ফেল ছায়াখানি। রচিলে যে আলো দিয়ে তব বিশ্বতল আমি সেথা অতিথি কেবল। হেথা হোথা যদি পড়ে থাকে কোনো ক্ষুদ্র ফাঁকে নাই হল পুরা সেটুকু টুকুরা-- রেখে যেয়ো ফেলে অবহেলে, যেথা তব রথ শেষ চিহ্ন রেখে যায় অন্তিম ধুলায় সেথায় রচিতে দাও আমার জগৎ। অল্প কিছু আলো থাক্, অল্প কিছু ছায়া আর কিছু মায়া। ছায়াপথে লুপ্ত আলোকের পিছু হয়তো কুড়ায়ে পাবে কিছু-- কণামাত্র লেশ তোমার ঋণের অবশেষ।